ঢাকা,শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

সংকট কাটাতে কয়লা উত্তোলন বাড়াবে ইন্দোনেশিয়া

বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহূত কয়লার অন্যতম শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া। রাশিয়া থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেসব দেশে কয়লার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, সেসব দেশের চাহিদা পূরণে জ্বালানিটির উত্তোলন বাড়াতে সক্ষম হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশ। সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী আরিফিন তাসরিফ। খবর বিজনেস রেকর্ডার।

জ্বালানিমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর পশ্চিমা দেশগুলো নড়েচড়ে বসে। রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে কয়লা বাণিজ্যও। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বেশকিছু ক্রেতা দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রতি কয়লা সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে। তবে এসব দেশের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

অস্ট্রেলিয়ান সরকার ও ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি কর্তৃক আয়োজিত সিডনি এনার্জি ফোরামে রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তাসরিফ বলেন, রাশিয়া থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে যেসব দেশ কয়লা সংকটে পড়েছে, সেসব দেশকে আমরা সর্বোচ্চ সাহায্য করব।

চলতি বছর ৬৬ কোটি ৩০ লাখ টন কয়লা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার। তবে এ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন হলে রফতানি কতটুকু বাড়বে তা নির্দিষ্ট করে জানাননি জ্বালানিমন্ত্রী।

জ্বালানিমন্ত্রী বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত উৎস রয়েছে। তবে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে আমাদের অবশ্যই উত্তোলন বাড়াতে হবে। এদিকে খনি মালিকদের মোট উত্তোলিত কয়লার ২৫ শতাংশ স্থানীয় বাজারের জন্য সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ইউরোপ বর্তমানে কয়লা সংকটে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়ান কয়লা অঞ্চলটির চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে সক্ষম হবে না। তবে অঞ্চলটি তাদের ব্যবহারের মাত্রা সমন্বয় করতে পারে।

এদিকে চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ায় কয়লার ব্যবহার বাড়ার পূর্বাভাস মিলেছে। আরিফিন তাসরিফ জানান, এ বছর দেশটির বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় ১২ কোটি ৭০ লাখ টন কয়লা ব্যবহারের প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর আগের প্রাক্কলনে ১১ কোটি ৯০ লাখ টন ব্যবহারের কথা জানানো হয়েছিল।

গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কয়লা উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার নীতিনির্ধারকরা। ওই বছরের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে দেশটির খনিগুলোয় জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন ব্যাহত হয়। কয়লা উত্তোলন কোম্পানিগুলো চলতি বছর বৈশ্বিক ও স্থানীয় বাজারে পণ্যটির চাহিদা বাড়বে বলে আশাবাদী। কারণ মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে অর্থনৈতিক অবকাঠামোয় পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এর মানে হলো, চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ায় কয়লা উত্তোলনও লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়বে।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টন কয়লা উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ইন্দোনেশিয়া। উত্তোলন-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কয়লা উত্তোলন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে চলতি বছর ৬৬ কোটি ৩০ লাখ টন কয়লা উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: